গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান
অনুচ্ছেদ ০৬
নাগরিকত্ব
(১) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে।
(২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন।
নাগরিক ও নাগরিকত্ব:
নাগরিক হলো কোন সার্বভৌম রাষ্ট্রের একজন আইনস্বীকৃত সদস্য।
এই সদস্যত্ব নাগরিককে কিছু নির্দিষ্ট অধিকার এবং কর্তব্য প্রদান করে।
কোন রাষ্ট্রের নাগরিককে রাষ্ট্র নিম্নোক্ত অধিকার প্রদান করে থাকে:
- নিরাপত্তা,
- শিক্ষা,
- স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদি সুবিধা প্রদান করে।
নাগরিক হিসেবে কোন ব্যক্তির কর্তব্য হলো:
- রাষ্ট্রের আইন মেনে চলা,
- কর দেওয়া,
- সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া ইত্যাদি।
সুনাগরিকের গুণাবলি:
একজন সুনাগরিকের তিনটি মৌলিক গুণাবলি হচ্ছে:
১. বুদ্ধি
২. বিবেক ও
৩. আত্মসংযম
নাগরিকের পদমর্যাদাকে বলা হয় নাগরিকত্ব।
নাগরিকত্ব জন্মসূত্রে বা অর্জনসূত্রে লাভ করা যায়। ভিন্ন ভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন রীতি অনুসরণ করে নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব মূলত জন্মসূত্রে বা রক্তসম্পর্কের মাধ্যমে, স্থান বা জন্ম বৈধতা নির্বিশেষে সরবরাহ করা হয়।
জাতীয়তা:
জাতীয়তা একটি মানসিক ধারণা; যার কারণে একদল ব্যক্তি তাদের ভাষা, চিন্তা, প্রথা, সংস্কৃতি ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের অন্য জনসমাজ থেকে আলাদা ভাবে এবং নিজেদের মধ্যে ঐক্যবোধ তৈরি করে।
অর্থাৎ জাতীয়তা থেকেই জাতির উদ্ভব হয়।
জাতীয়তা বনাম নাগরিকত্ব:
জন্ম বা উত্তরাধিকারসূত্রে জাতীয়তা লাভ হয়। জাতীয়তা কখনই পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যে দেশেই যাই না কেন আমরা বাঙালি। এটি পরিবর্তন বা স্থানান্তর সম্ভব নয়।
আর নাগরিকত্ব পরিবর্তন করা যায়। নাগরিকত্ব নাগরিকের আবেদন গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার প্রদান করে থাকে। যেমন: আমরা আমেরিকার নাগরিকত্ব নিতে পারি। এমনকি একাধিক দেশের নাগরিক (দ্বৈত নাগরিকত্ব) হওয়াও সম্ভব।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫নং অনুচ্ছেদের
১নং দফা অনুসারে, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হবে।
২নং দফা অনুসারে, আমরা জাতি হিসেবে বাঙালি। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি।