জাতির পিতা:
যখন একদল লোক একটি নির্দিষ্ট ভুখন্ডে বসবাস করে, একটি সাধারণ ভাষায় কথা বলে, একই ইতিহাস ও সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত হয় এবং একই চেতনায় বিশ্বাস করে তখন তাদের বলা হয় একটি জাতি।
২০০১ সালে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন’ নামে সংসদে একটি আইন পাশ করা হয়। এই আইনে জাতির পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি জাতির পিতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
শুধু তাই নয়; ইতিহাস থেকে আমরা এটিও জানতে পারি যে তিনি বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতিও।
বঙ্গবন্ধু ও জাতির জনক:
“জাতির জনক” একটি উপাধি। কোন ব্যক্তি কোন দেশ, রাষ্ট্র বা জাতি প্রতিষ্ঠার পেছনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলে তাকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য জাতির জনক উপাধি দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ৩রা মার্চ পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় ছাত্রনেতা আ স ম আবদুর রব বঙ্গবন্ধুকে এ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।
তবে প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক উপদেশ্টা এইচ টি ইমামের মতে এটি বলা বেআইনি। সংবিধান অনুসারে জাতির পিতা বলাই যুক্তিযুক্ত।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪ক অনুচ্ছেদ অনুসারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি নিম্ন লিখিত অফিস-আদালত ও প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করতে হবে:
- রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয়,
- সকল সরকারী ও আধা-সরকারী অফিস,
- সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান,
- সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়,
- সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,
- বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশন
উল্লেখ্য ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে প্রতিকৃতি সম্পর্কিত কোন বিধান ছিল না। চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৪ক অনুচ্ছেদ সংযোজন করা হয় এবং পঞ্চদশ সংশোধনীতে তা উপরিউক্ত শব্দগুচ্ছে প্রতিস্থাপন করা হয়।
পিতা বনাম জনক:
জনক বা জন্মদাতা হলো বায়োলজিক্যাল বিষয় আর পিতা মানে হলো পালনকর্তা। সাধারণত যিনি জন্ম দিয়ে থাকেন তিনিই পালন করে থাকেন। তাই জনক ও পিতা একই ব্যক্তি হয়ে থাকে। কিন্তু কখনও কখনও জনক ও পিতা ভিন্ন ব্যক্তি হতে পারে। যেমন: শিশুর জন্মের পর অন্য কোন ব্যক্তি (ধরা যাক তার সৎ বাবা) শিশুটিকে পালন করলে তিনি পিতা, তবে জনক নন।